স্বাস্থ্যসম্মত শুটকি তৈরির প্রক্রিয়াসমূহ জেনে,রাসায়নিকমুক্ত শুঁটকি বেছে নিন আপনার ও আপনার পরিবার-পরিজনের জন্য।
জানেন তো, আগের দিনে জেলেরা সমুদ্র থেকে মাছ ধরে স্বপরিবারে শুঁটকি শুকানোর কাজ করতেন? সেই শুঁটকি মাছ সংরক্ষণ করা হত সারা বছরের জন্য। বাঙ্গালী বধু্রা শুঁটকি মাছকে বিভিন্ন ভাবে রান্না করতেন, কখনো শুঁটকি মাছের তরকারি, কখনো ভর্তা আবার কখনো শুঁটকির মরিচখোলা। শুঁটকি রান্নার মৌ মৌ সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়তো বাড়ির চারপাশে। বাদলা দিনে রিমঝিম বৃষ্টির আওয়াজ উপভোগের পাশাপাশি শুঁটকি রান্নার সাথে দোয়া উঠা ঘরম ঘরম ভাত যেন বাঙ্গালীর এক ঐতিহ্যবাহী খাবার।
আগের দিনে শুঁটকি মাছ বিশ্বব্যাপি এতো জনপ্রিয় ছিল না। সময়ের সাথে সাথে শুঁটকি মাছ এখন গোটা দেশ ও দেশের বাইরে পরিচিতি লাভ করেছে।
তাজা মাছের চেয়ে শুঁটকি মাছে আমিষ, খনিজ লবণ, লৌহ ও ক্যালসিয়ামের পরিমাণ রয়েছে অনেক বেশি। তবে শুঁটকি মাছ যদি রাসয়নিক মুক্ত না হয় সেক্ষেত্রে তা স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে হুমকি স্বরূপ।
বাজারে বিপুল পরিমাণ শুঁটকি পাওয়া গেলেও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি পাওয়া যায় খুবই কম। দেশে-বিদেশের বিপুল চাহিদার এই শুঁটকির মাননিয়ন্ত্রন করা জরুরি হলেও বর্তমানে এর রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে সবার মনে।
জেলেদের সঠিক পদ্ধতিতে শুঁটকি মাছ তৈরি ও সংরক্ষণের জ্ঞান না থাকায় এটি অল্প সময়েই খাবার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই সম্ভাব্য লোকসান এড়াতে ব্যপারীরা বেছে নেয় বাসুডিন, নগোস, ডায়াজিনের মত বিষাক্ত রাসায়নিক গুলো। এই রাসয়নিক এতই ভয়াবহ যে মাছে তা প্রয়োগের ফলে এর আসেপাশে কোন জীবিত কীটপতঙ্গও ঘোরাফেরা করে না। ধীরে ধীরে রাসয়নিক গুলো আমাদের বডিসেলে জমা হতে থাকে এবং দেহের কোষকে ধ্বংস করে ক্যন্সার,কিডনি ড্যামেজ,খোসপাঁচড়াসহ নানা চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।
সনাতন পদ্ধতি এড়িয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ গ্ৰীণ হাউজে শুঁটকি তৈরি করা হলে হুমকিজনক এই পরিস্থিতি থেকে রেহায় পাওয়া সম্ভব।
কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া এলাকায় গ্ৰীনহাউজ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় শুটকিজের শুঁটকি।
সংগ্ৰহ করা সামুদ্রিক তাজা মাছ কেটে কুটে ধৌত করা হয় পরিস্কার পানিতে। ‘ফিস ড্রায়ারের’ মাধ্যমে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে মাছ শুকানো হয় বলে ফাইবার পচে না এবং কোন রূপ দূ্র্গন্ধ হয় না। স্বচ্ছ সেলুলয়েড এবং নেট দ্বারা ড্রায়ার আবৃত থাকায় মাছি ও পোকামাকড় প্রবেশ করতে পারে না। মাছ শুকনো শেষে, এসব শুঁটকি সংরক্ষণ করা হয় হিমাগারে। শুটকিজের শুঁটকিতে কোনো স্বাস্থঝুকি থাকে না বলে এই শুঁটকি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে ও সুনাম কুড়িয়েছে।
শুঁটকির গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে শুটকিজ সর্বদা সচেতন। তাই আপনার ও আপনার পরিবার পরিজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শতভাগ আস্থা রাখতে পারেন শুটকিজের উপর।