Shutkiz নিবেদিত
হুঁনি রাঁধনত গুনী হন
Kaberi Monir
বেগুন আলু দিয়ে ছুড়ি শুটকি রান্না
আমি হলাম জগাখিচুড়ি! বলুন তো, কিভাবে?
জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে হলেও বাবার বাড়ি সিলেট, নানার বাড়ি পাবনা এবং শ্বশুর বাড়ি চাঁদপুর! এবার বলুন, এতোগুলা জায়গার সংমিশ্রণে হয়ে গেলাম না জগাখিচুড়ি! সে যাই হোক ফায়দা টা কিন্তু আমারই হয়েছে। বিভিন্ন জেলার রান্না সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি এবং খেয়েছিও!
যেমন চট্টগ্রামের মানুষ মাত্রই শুটকি প্রিয়। কিন্তু আবার পাবনার মানুষ শুটকির নামও শুনতে নারাজ! সিলেট এবং চাঁদপুরের মানুষ কমবেশি মোটামুটি সবাই শুটকি খায়। এখন এই জগাখিচুড়ি আমি কিন্তু মোটামুটি পছন্দ করি শুটকি মাছ। আর যেহেতু রান্না করতে ভালোবাসি,তাই মাঝে মাঝেই রান্না করা হয় চট্টগ্রামের ঐতিহ্য এই শুটকি।
এবার আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম খুবই কমন কিন্তু মজাদার বেগুন – আলু দিয়ে ছুড়ি শুটকি রান্নার রেসিপি। যদিও সবাই এটার
উপকরণ ও প্রনালী জানেন, তবুও চলুন আরেকবার ঝালাই করে নেই……
উপকরণঃ
- ছুড়ি শুঁটকি- ২৫০ গ্রাম
- আলু – ৩০০ গ্রাম ( ফালি করে কাটা)
- বেগুন – ৩০০ গ্রাম (ডুমো করে কাটা)
- পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
- রসুন কুচি- ১ কাপ (মোটা করে কুচানো)
- টমেটো কুচি – ১ কাপ
- হলুদ গুঁড়া- ১ ১/২ টেবিল চামচ
- লাল মরিচ গুঁড়া- ২ টেবিল চামচ
- আদা বাটা- ১ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা- ১ টেবিল চামচ
- জিরা,ধনিয়ার গুঁড়া – ১/২ চা চামচ
- কাঁচা মরিচ – ৪/৫ টা ( ফালি করা)
- ধনিয়াপাতা – পছন্দ অনুযায়ী
- লবণ- স্বাদ মতো
- তেল- ১ কাপ
- পানি – পরিমাণ মতো
প্রস্তুত প্রণালিঃ
প্রথমে শুটকি মাছ গুলোর মাথা, লেজ এবং পাশের পাখনা গুলো ভালো করে ছেঁটে নিতে হবে। অনেকে ছুড়ি শুটকির মাথাও রান্নায় দিয়ে দেন।তবে আমি মনে করি, শুটকির মাথা রান্নায় না দেয়াই ভালো। এতে একধরনের আঁশটে গন্ধ থাকে। এরপর শুটকি গুলোকে ছুড়ি বা বটি দিয়ে একটু আঁচড়ে নিতে হবে। এতে করে শুটকির গায়ে লেগে থাকা লবন ও বালু ঝরে যাবে।
এবার একটি খোলা গরম করে তাতে শুটকি মাছ গুলো দিয়ে ভালো করে টেলে নিতে হবে। এতে করে যদি শুটকি মাছ গুলো একটু কম শুকনো হয় বা ভেজা থাকে সেটা শুকিয়ে যাবে এবং সাথে সাথে দারুণ সুন্দর একটা ঘ্রান চলে আসবে।আপনি চাইলে টেলে না নিয়েও রাঁধতে পারেন। এবার শুঁটকি গুলোকে একটু বড় করে টুকরো করে নিন।বেশি ছোট করে টুকরো করলে পরবর্তী তে ভেঙে যেতে পারে।
শুটকি মাছ গুলো গরম পানিতে লবন দিয়ে আধ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। এতে করে শুটকিতে থাকা আঁশটে গন্ধ এবং যেহেতু অনেক সময় বালুর উপর বিছিয়ে শুটকি শুকানো হয় তাই শুটকির গায়ে বালু লেগে থাকে। সেই বাড়তি বালু গুলো চলে যাবে।এভাবে বারবার পানি পরিবর্তন করে খুব ভালো করে ডলে ডলে শুটকি মাছ গুলো ধুয়ে নিতে হবে।তারপর ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে মাছগুলো পানি ঝরিয়ে রাখুন।
এবার প্যান বা কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি ও সামান্য লবণ দিয়ে ভাজতে থাকুন । কিছুক্ষণ ভেজে রসুন বাটা, আদা বাটা হলুদ গুঁড়া এবং লাল মরিচ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। তেল বেরিয়ে এলে সামান্য পানি দিয়ে নাড়তে থাকুন। মসলা শুকিয়ে এলে একটু একটু করে পানি দিন যেন নিচে লেগে না যায়। এবার দিয়ে দিন ধুয়ে রাখা শুটকি গুলো।কিছুক্ষণ নেড়ে রসুন কুচি দিয়ে ভালো করে নেড়ে খানিকটা পানি দিয়ে ঢেকে দিন প্যান। শুটকি গুলো ভালো করে সিদ্ধ হলে এবার এতে দিয়ে দিন কেটে রাখা আলু গুলো।আলু সহ আবারো শুটকি মাছ কষিয়ে দিয়ে দিন কেটে রাখা বেগুন।
এখানে আমরা বেগুন গুলো একটু দেরীতে দিবো।কারন আলুর চেয়ে বেগুন খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়ে যায়।এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন বেশি নাড়াচাড়া করে বেগুন গুলো আবার ভর্তা না করে ফেলি।তাহলে দেখতেও সুন্দর লাগবে না! এবার শুটকি,আলু ও বেগুন সিদ্ধ হওয়ার মতো পর্যাপ্ত পানি দিয়ে ঢেকে দিন।
ফুটে উঠলে পাঁচ-সাত মিনিট পর ঢাকনা খুলে আঁচ কমিয়ে দিন। জিরা ধনিয়ার গুঁড়া দিয়ে আবারো ঢেকে দিন।এই পর্যায়ে দিয়ে দিন চিড়ে রাখা কাঁচা মরিচ ও ধনিয়াপাতা কুচি।মাখা মাখা হয়ে এলে চুলা বন্ধ করে পাঁচ মিনিট ঢেকে রাখুন।
পরিবেশনঃ
গরম গরম ভাতের সঙ্গে সুগন্ধি লেবু ও বোম্বাই মরিচ দিয়ে পরিবেশন করুন আলু – বেগুনের শুটকি।